Breaking News

২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেন্টাইন’ আমার জীবনে অভিসাপ


 জেড নিউজ বিডি.কম রিপোর্টঃ  ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। কলকাতা থেকে ট্রেনে বারাসত স্টেশনে নেমেছিলেন রিঙ্কু দাস। দিদিকে সাইকেলে বসিয়ে অন্ধকার পথ ধরে বাড়ি ফিরছিল রাজীব। মত্ত দুষ্কৃতীরা ভাই-বোনকে ভেবেছিল প্রেমিক-প্রেমিকা।
এর পরেই শুরু করেছিল অসভ্যতা। দিদির সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে ওই রাতেই হাতে খুন হয় সে বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীব দাস। ২০১৫ সালে আর এক ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র আগের দিন রাজীব খুনের ঘটনায় তিন অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় বারাসত আদালত।
একটি ঘটনা আমূল বদলে দিয়েছে পরিবারটাকে, সঙ্গে গোটা জেলা সদরের পরিবেশও। অন্ধকার সেই রাস্তায় এখন আলো জ্বলেছে। বিশাল একটি থানা ভেঙে চারটি থানা হয়েছে। কমেছে অপরাধ। তবু আট বছর পরেও ‘ভ্যালেন্টাইন’ শব্দটা শুনলেই কেঁপে ওঠেন তিনি। আঁতকে ওঠে মহল্লা।
বুধবার বারাসতের গেঞ্জিমিলের বাড়িতে বসে ভ্যালেন্টাইন শব্দটা শুনেই দুকানে হাত চাপা দেন রিঙ্কু। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ও যে আমার ভাই, হাতে পায়ে ধরেও সে দিন কিছুতেই বোঝাতে পারিনি। ঘটনার পর থেকে ৫-৬ বছর বাড়ি থেকে বিশেষ বেরোতেন না রিঙ্কু। এখন নবম শ্রেণিতে পড়ে তাঁর মেয়ে। তাকে পড়াতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেরোতে হয়। রাত ৯টা নাগাদ মেয়েকে নিয়ে ফেরেন। বললেন, এখন আর রাস্তাঘাটে সে সব সমস্যা নেই। আলো জ্বলেছে। সে দিনও এমন থাকলে ভাইটা কত বড় হয়ে যেত!
সে বারই মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল রাজীবের। সেই রাতে বাড়ি ফেরার পথে শহরের যে-এলাকায় বিভিন্ন জেলা সদর অফিস, সেই রাস্তাতেই তিন মত্ত যুবক তাঁদের থামায়। রিঙ্কুকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে, গায়ে মদ ঢেলে দেয়। রাজীব রুখে দাঁড়ানোয় তাকে পেটাতে থাকে। চিৎকার করে সাহায্য চেয়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের বাংলো সংলগ্ন পুলিশ কর্তার বাংলোর গেট ধরে ঝাঁকাতে থাকেন রিঙ্কু। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেন না। দুষ্কৃতীরা কুপিয়ে খুন করে রাজীবকে।
সেই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। তার পরেও একের পর এক নারী নিগ্রহ, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটতেই থাকে বারাসতে। কামদুনির গণধর্ষণ নিয়ে ফের গোটা দেশ উত্তাল হওয়ার পরে বারাসত থানা ভাগ করে মধ্যমগ্রাম, শাসন, দত্তপুকুর থানা করা হয়। যেখানে রাজীব খুন হয়েছিল তার চারদিকে আলো লাগিয়ে শুরু হয় পুলিশি টহলদারি।
পরিসংখ্যান বলছে, পরপর ঘটে যাওয়া সে সব অপরাধ যে এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। শেষ এক বছরে বারাসত থানায় ইভটিজিং নিয়ে একটি অভিযোগ হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অভিযুক্তকে সঙ্গে সঙ্গে ধরাও হয়েছে।’

জেড নিউজ বিডি.কম /প্রতিনিধি   



No comments