Breaking News

নতুন বিয়ে করেছেন? জেনে নিন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি



জেড নিউজ বিডি.কম রিপোর্টঃ নতুন বিয়ে করেছেন? জেনে নিন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
বর্তমান বিশ্বে পারিবারিক স্বাধীনতার এক যুগান্তকারী আবিষ্কার হলো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। এই আবিষ্কার নারী জাতিকে তার স্বকীয়তা অধিকার আদায়ের ব্যপারেও ব্যপক সাহায্য করেছে। শুধু তাই নয়, এটি আমাদের পরিবারকে সুন্দর সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিয়েছে। কিন্তু এর আছে নানান পদ্ধতি। যারা নতুন বিয়ে করেছেন, অনেকেই বুঝতে পারেননা কোন পদ্ধতি গ্রহন করবেন। আজকে এই পদ্ধতিগুলো আমরা আলোচনা করবো। আপনি দেখে নিতে পারেন কোনটি আপনার জন্য সুবিধাজনক
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রকারভেদ
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গুলোকে প্রধানত: দুইভাগে ভাগ করা যায়।
যথা:
) সনাতন পদ্ধতি ) আধুনিক পদ্ধতি
) সনাতন পদ্ধতিঃ
যে পদ্ধতি পরিবারের সদস্য সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ঐতিহ্যগতভাবে সমাজে প্রচলিত আছে সেগুলোকে সনাতন পদ্ধতি বলে। যেমন
) প্রত্যাহার বা আযলঃ স্বামীর বীর্য বাইরে ফেলা
) বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো
) নিরাপদকাল মেনে চলা
) নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সহবাস থেকে বিরত থাকা বা আত্মসংযম
) আধুনিক পদ্ধতিঃ
আধুনিক পদ্ধতিকে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:
) নন-ক্লিনিক্যাল এবং
) ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি
1) নন-ক্লিনিক্যাল: যে পদ্ধতিগুলো অন্যের সাহায্য ছাড়া নারী-পুরুষ নিজেই ব্যবহার করতে পারে সেগুলোকে নন-ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি বলে। যেমনঃ
খাবার বড়ি
কনডম
2) ক্লিনিক্যাল: যে পদ্ধতিগুলো ব্যবহারের জন্য নারী-পুরষকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেবাদানকারীর সাহায্য নিতে হয় সেগুলোকে ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি বলে। যেমন: অস্থায়ী পদ্ধতি এবং স্থায়ী পদ্ধতি।
অস্থায়ী পদ্ধতি
ইনজেকশন
আই.ইউ.ডি
নরপ্ল্যান্ট
স্থায়ী পদ্ধতি
পুরুষ বন্ধ্যাকরণ- ভ্যাসেকটমী
নারী বন্ধ্যাকরণ- টিউবেকটমি বা লাইগেশন
খাবার বড়ির প্রকার, মাত্রা, কার্যপদ্ধতি এবং সুবিধা, অসুবিধা
খাবার বড়ির প্রকার মাত্রা
জন্ম নিয়ন্ত্রনের জন্য বিভিন্ন প্রকারের খাবার বড়ি পাওয়া যায়। যেমন: নরকোয়েস্ট, ওভাষ্ট্যাট, ওভাকন, মারভেলন, সি-, সুখী (স্বল্পমাত্রার বড়ি) প্রত্যেক প্রকার বড়িতে হরমোনের মাত্রার পার্থক্য থাকতে পারে
কার্যপদ্ধতি
ডিম্বাশয়ের ডিম্বকে পরিপক্ক হতে বের হতে বাধা দেয়
সুবিধা
সাফল্যের হার বেশী।
অনাকাংখিত গর্ভসঞ্চার খুবই কম হয়।
অতিরিক্ত সতর্কতা ছাড়া যৌন সহবাস করা যায়।
মাসিক নিয়মিত হয়।
মাসিকের রক্তস্রাব কম হয়। মাসিকের ব্যাথা থাকলে তা কমে যায়।
নিয়মিত বড়ি খাওয়ার ফলে অনেক মহিলার স্বাস্থ্য ভাল হয়।
আয়রন বড়ির জন্য রক্তস্বল্পতা কম হয়।
ডিম্বাশয় জরাযু ঝিল্লি¬তে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পি.আই.ডি (পেলভিসের সংক্রমণ ) কম হয়।
বড়ি খাওয়া বন্ধ করলে গর্ভধারণ করা যায়
অসুবিধা
প্রতিদিন মনে করে খেতে হয়।
যারা ধূমপান করে তাদের বেশী জটিলতা দেখা দেয়।
টিউমার বা জন্ডিস থাকলে ব্যবহার করা যাবেনা। মাসিকের পরিবর্তন ঘটতে পারে।
ওজন বেড়ে যেতে পারে।
মেজাজ খিটখিটে হয়।
পদ্ধতি বন্ধ করে দেওয়ার পর গর্ভধারণে দেরী হতে পারে।
এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে কোন ভূমিকা নাই
কার্যকারীতা
সাফল্যের হার বেশী। অনাকাংখিত গর্ভসঞ্চার খুবই কম হয়
কনডমের কার্যপদ্ধতি, সুবিধা, অসুবিধা এবং কার্যকরীতা
কনডম রাবারের দ্বারা তৈরি চোঙ্গার মতো যার একদিক খোলা এবং একদিক বন্ধ বোঁটার মতো। এটি পুরুষের যৌনাঙ্গে পরতে হয়। বিভিন্ন নামে কনডম পাওয়া যায়। যেমন রাজা, সুলতান, প্যানথার, ম্যাজিষ্টিক, সেনসেশন
কার্যপদ্ধতি
সহবাসের সময় পুরুষাঙ্গে কনডম ব্যবহারের ফলে শুক্রকীট নারীর জরাযুতে প্রবেশ করতে পারে না ফলে শুক্রকীট ডিম্বানুর সংস্পর্শে আসতে পারে না বলে নারী গর্ভবতী হয় না
সুবিধা
যে কোন পুরুষ ব্যবহার করতে পারে।
কোন ডাক্তারের সহযোগীতা লাগে না।
কনডম বেশ সস্তা এবং সব জায়গায় কিনতে পাওয়া যায়।
এইচআইভি/এইডস সহ নানা রকম যৌন রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
যৌন সহবাস দীর্ঘায়িত হয়।
জন্ম নিয়ন্ত্রনে পুরুষকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়
অসুবিধা
প্রত্যেক সহবাসে ব্যবহার করতে হয়।
দুজন সঙ্গীরই যথেষ্ট সহযোগিতা থাকা দরকার
কার্যকারীতা
প্রতিবার সঠিক নিয়মে কনডম ব্যবহার করলে ৮৮% ভাগ পর্যন্ত কার্যকর হয়। শুক্রকীটনাশক ফেনা বড়ির সাথে ব্যবহার করলে প্রায় ৯৯% ভাগ পর্যন্ত কার্যকর হতে পারে
ইনজেকশনের কার্যপদ্ধতি, সুবিধা, অসুবিধা কার্যকরীতা
ইনজেকশন প্রকার-DMPA সাদা রং এর দ্রবীভূত জলীয় পদার্থ, ডোজ টি ভায়েলে থাকে
কার্যপদ্ধতি
.জরায়ুর মুখে শ্লেষ্মা তৈরী করে ফলে পুরুষের শুক্রকীট জরাযুতে ঢুকতে পারেনা।
. ডিম্বাশয়ের ডিম্বকে পরিপক্ক হতে বের হতে বাধা দেয়।
. জরায়ুর ভিতরের গায়ে ঝিল্লী¬ পরিবর্তন করে, ফলে ডিম্ব জরায়ুতে বসতে পারে না
সুবিধা
.নিরাপদ কার্যকর পদ্ধতি।
.ব্যবহার বিধি সহজ ( মাসের জন্য)
. রক্ত জমাট বাধার সমস্যা দেখা যায় না।
. সহবাসের সাথে সম্পর্ক নাই।
.গোপনীয়তা রক্ষা করে নেয়া যায়।
. বন্ধ করলে গর্ভধারণ করা যায়।
. প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মী দিতে পারে।
. শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো মা হলেও নেয়া যায়
অসুবিধা
অনেকের ইনজেকশন নেয়ার ক্ষেত্রে ভয় থাকে।
নিজে নেওয়া যায়না
কার্যকরীতা
অত্যন্ত কার্যকরী প্রায় ১০০% ভাগ এবং নিরাপদ জন্মনিরোধক পদ্ধতি
আই ইউ ডি বা কপার টির সুবিধা , অসুবিধা কার্যকরীতা
আই ইউ ডি (IUD Intra Uterine Device) জরায়ুর ভেতরে ব্যবহারের জন্য একটি জিনিস যা জন্মনিয়ন্ত্রণ করে। অনেক উন্নত ধরণের আই ইউ ডি পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে। বর্তমানে কপার-টি সবচাইতে জনপ্রিয়
সুবিধা
.ব্যবহার করা সহজ।
.প্রতিদিন মনে করতে হয় না।
. যৌন সঙ্গমে বাধা সৃষ্টি করে না।
. বুকের দুধ কমে না।
. যে কোন সময় খুলে ফেলা যায়।
. খুলে ফেলার পর গর্ভধারনের ক্ষমতা ফিরে আসে।
. কম খরচে বহুদিন জন্মনিরোধ করা যায়
অসুবিধা
সুতা পরীক্ষা করতে হয়
কার্যকারীতা
খুব বেশী কার্যকরী(৯৪-৯৮%) একটি সহজ দীর্ঘমেয়াদী অস্থায়ী পদ্ধতি
নরপ্ল্যান্টের কার্যপদ্ধতি, সুবিধা, অসুবিধা, কার্যকারীতা
বর্তমানে এক প্রকার ৬টি ক্যাপসূলে ডোজ পাওয়া যায়
কার্যপদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে ছয়টি ছোট ছোট নরম চিকন ক্যাপসূল (দেয়াশলাই-এর কাঠির চেয়ে ছোট) মহিলাদের হাতের কনুইয়ের উপরে ভিতরের দিকে চামড়ার নিচে ঢুকিয়ে দেয়া হয়
সুবিধা
.পদ্ধতিটি বছরের জন্য কার্যকর
.পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম
.যে কোন সময় ডাক্তারের কাছে গিয়ে খোলা যায়
অসুবিধা
.নিয়মিত মাসিক না হওয়া বা অনেকদিন বন্ধ থাক।
. মাসিক বন্ধ হলে গর্ভসঞ্চার হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে।
.মাসিকের সময় রক্তস্রাব বেশী হতে পারে।
.দুই মাসিকের মধ্যবর্তী সময়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্তস্রাব হতে পারে।
.মাথা ব্যথা।
.ওজন বেড়ে যাওয়া।
.মন বিষন্ন থাকা।
.মুখে বা শরীরে মেছতার দাগ থাকলে বেড়ে যেতে পারে এবং মুখে লোম দেখা দিতে পারে
কার্যকারীতা
এটি একটি সহজ, নিরাপদ কার্যকর পদ্ধতি
পুরুষ বন্ধ্যাকরণ বা ভ্যাসেকটমির সুবিধা, অসুবিধা কার্যকরীতা
ভ্যাসেকটমি বা পুরুষ বন্ধ্যাকরণ পুরুষদের জন্মনিয়ন্ত্রণের স্থায়ী পদ্ধতি। এতে শুক্রকীটবাহী নালী দুটির কিছু অংশ বেঁধে কেটে দেয়া হয়
সুবিধা
.অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণের ভয় না থাকায় সহবাসে আনন্দ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
. তেমন কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই।
.আর কোন পদ্ধতি গ্রহণের ঝামেলা থাকে না
অসুবিধা
যেহেতু স্থায়ী পদ্ধতি পরবর্তীতে সন্তান চাইলেও তা প্রায় অসম্ভব
কার্যকরীতা
স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। প্রায় ১০০% ভাগ কার্যকরী
নারী বন্ধ্যাকরণ-টিউবেকটমি/লাইগেশন
খুব ছোট অপারেশনের মাধ্যমে মহিলারে প্রজনন ক্ষমতাকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করাই হচ্ছে ডিম্ববাহী নালী। জরায়ুর দুই ধারে দুটি ডিম্ববাহী নালী থাকে। সেই নালী দুটির কিছুটা অংশ বেঁধে কেটে দেয়াকে লাইগেশন বলে
কার্যপদ্ধতি
ডিম্বাশয় থেকে ডিম্ব বের হয়ে শুক্রানুর সাথে মিলিত হতে পারে না। ফলে গর্ভসঞ্চার হয় না
সুবিধা
অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণের ভয় না থাকায় সহবাসে আনন্দ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তেমন কোন পাশ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই। আর কোন পদ্ধতি গ্রহণের ঝামেলা থাকে না। গর্ভবতী হলে মৃত্যুঝুঁকি আছে এমন নারীর জন্য খুবই প্রযোজ্য। আর সন্তান না চাইলে এই অপারেশন খুবই ভাল
অসুবিধা
যেহেতু স্থায়ী পদ্ধতি পরবর্তীতে সন্তান ধারণ করতে চাইলেও তা সম্ভব নয়। অপারেশনের পর একরাত হাসপাতাল অথবা ক্লিনিকে থাকতে হয়
কার্যকরীতা
স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। প্রায় ১০০% ভাগ কার্যকরী
পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সেবা প্রাপ্তির জন্য যোগাযোগ
o
পরিবার পরিকল্পনা কর্মী
o
স্বাস্থ্য কর্মী
o
স্যাটেলাইট ক্লিনিক
o
ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র
o
মা শিশু কল্যাণ কেন্দ্র
o
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
o
জেলা হাসপাতাল
o
বেসরকারী ক্লিনিক
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন..জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতিকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর. জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতিকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। . সনাতন পদ্ধতি . আধুনিক পদ্ধতি
প্রশ্ন..খাবার বড়ির সুবিধা অসুবিধা গুলো কি কি?
উত্তর.
সুবিধা:
অতিরিক্ত সতর্কতা ছাড়া যৌন সহবাস করা যায়।
মাসিক নিয়মিত হয়।
মাসিকের রক্তস্রাব কম হয়। মাসিকের ব্যথা থাকলে তা কমে যায়।
নিয়মিত বড়ি খাওয়ার ফলে অনেক মহিলার স্বাস্থ্য ভাল হয়।
আয়রন বড়ির জন্য রক্তস্বল্পতা কম হয়।
ডিম্বাশয় জরাযু ঝিল্লি¬তে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পি.আই.ডি(পেলভিসের সংক্রমণ ) কম হয়।
বড়ি খাওয়া বন্ধ করলে গর্ভধারণ করা যায়।
অসুবিধা:
প্রতিদিন মনে করে খেতে হয়।
যারা ধুমপান করে তাদের বেশী জটিলতা দেখা দেয়।
টিউমার বা জন্ডিস থাকলে ব্যবহার করা যাবেনা। মাসিকের পরিবর্তন ঘটতে পারে।
ওজন বেড়ে যেতে পারে।
মেজাজ খিটখিটে হওয়া।
পদ্ধতি বন্ধ করে দেওয়ার পর গর্ভধারণে দেরী হতে পারে।
এইচঅইভি/এইডস প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে কোন ভূমিকা নাই
প্রশ্ন..জন্ম নিয়ন্ত্রনের স্থায়ী পদ্ধতি গুলো কি?
উত্তর. জন্ম নিয়ন্ত্রনের স্থায়ী পদ্ধতি গুলো হলো:
. পুরুষ বন্ধ্যাকরণ- ভ্যাসেকটমী
. নারী বন্ধ্যাকরণ- টিউবেকটমি বা লাইগেশন
প্রশ্ন.. কপার টির সুবিধা গুলো কি?
উত্তর.
.ব্যবহার করা সহজ।
.প্রতিদিন মনে করতে হয় না।
.যৌন সঙ্গমে বাধা সৃষ্টি করে না।
. বুকের দুধ কমে না।
. যে কোন সময় খুলে ফেলা যায়।
. খুলে ফেলার পর গর্ভধারনের ক্ষমতা ফিরে আসে।
.কম খরচে বহুদিন জন্মনিরোধ করা যায়
জেড নিউজ বিডি.কম /সজল


No comments